আজ

  • সোমবার
  • ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নুসরাত হত্যা মামলায় কেরোসিন ও বোরকা বিক্রেতার সাক্ষ্যগ্রহণ

  • নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আলোচিত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৭ম দিনের তিন জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। আজ রবিবার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে কেরোসিন বিক্রেতা লোকমান হোসেন লিটন, বোরকা দোকানদার জসিম উদ্দিন ও দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। এ নিয়ে হত্যা মামলার ৮ জন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

    গত ৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯ টায় সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার ছাদে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ৫ জন বোরকা পরে কেরোসিন ঢেলে নুসরাতকে হত্যা চেষ্টা করে। সেদিন নুসরাত বেঁচে গেলেও ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

    মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এম. শাহজাহান সাজু বলেন, আজ রোববার তিনজনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। আগামকাল সোমবার নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান ও দোকানদার জহিরুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছে আদালত।

    এর আগে গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরে রাফির বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও সহপাঠি নাসরিন সুলতানা, মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই এ মামলার সাক্ষি কার্যক্রম চলছে।

    এর আগে গত ২৭ জুন অভিযোগ গঠনের পর পরই ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীপক্ষের আটজন সাক্ষীকে আদালতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য উপস্থাপন করা হয়। ২০ জুন সাক্ষ্য গ্রহণের এই আদেশ দেন আদালত। এ মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে সাতজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

    মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে; যা মৃত্যুশয্যায় নুসরাত বলে গেছেন। ১০ এপ্রিল ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ফেনীর পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।

    অভিযোগপত্রের ১৬ আসামি হলেন- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।

    এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অন্য পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে পিবিআই। আদালত তা অনুমোদন করেন।

    এছাড়া যৌন হয়রানির মামলার পর নুসরাতের জবানবন্দি গ্রহণের সময় তার ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাইবার আইনে মামলা হওয়ার পর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

    সম্পাদনা : এএএম/এপি


    error: Content is protected !! please contact me 01718066090